সারাদেশ

ছাত্রলীগ করায় ত্যাজ্যপুত্র করলেন বাবা

বাংলার কথা ২৪ বাংলার কথা

প্রকাশিত: ৫:৩৫ অপরাহ্ণ, মে ২৪, ২০২৩

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় আলিফ মাহমুদ রুদ্র (২২) নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে ত্যাজ্যপুত্র (সম্পর্ক ছিন্ন) করার ঘোষণা দিলেন তার বাবা মো. রাসেল মোল্লা।

মঙ্গলবার (২৩ মে) দুপুরে রাসেল মোল্লা এক ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানান। আলিফ মাহমুদ রুদ্র কলাপাড়া পৌর এলাকার ৬ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি।

ছাত্রলীগ কর্মী আলিফ মাহমুদ রুদ্রর বাবা রাসেল মোল্লা বলেন, আমার ছেলে রুদ্র আমার অবাধ্য হয়েছে। সে কোনো কথাই শোনে না। আমি তাকে রাজনীতি করতে নিষেধ করেছি, কিন্তু আমার কথার বাইরে গিয়ে সে রাজনীতি করছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে রাজনীতির করতে গিয়ে পোলাপানের পেছনে খরচ করার জন্য সে যখন-তখন টাকা চায়। আমি কোনো উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়ে তাকে কয়েকবার টাকাও দিয়েছি। সর্বশেষ ওর মা তার স্বর্ণালঙ্কার বন্ধক রেখে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছে। এ টাকা নিয়ে সে তার অনুসারী ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের পেছনে খরচ করেছে। এভাবে সে বিভিন্ন সময় এসে টাকা চায়। আমি অর্থনৈতিকভাবে এতটা সচ্ছল নই যে, চাওয়া মাত্রই তাকে টাকা বের করে দিব। তাছাড়া আমি রাজনীতি পছন্দ করি না। আমার ছেলে ছাত্রলীগের রাজনীতি করুক সেটাও আমি চাই না।

দুঃখ করে তিনি আরও বলেন, আমার সন্তান রাজনীতি করতে গিয়ে নিজ দলের নেতা-কর্মীদের হামলার শিকার হয়ে জখম হয়েছে। মামলায় জড়িয়েছে। ছেলেকে চিকিৎসা করাতে এবং মামলা থেকে রক্ষা করতে আমি অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। বাবা হিসেবে এসব কামনা করি না। আমি এসব কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছি। যে কারণে আমি তাকে পরিবার থেকে ত্যাজ্য করার ঘোষণা দিয়েছি। এখন থেকে আমার পরিবারের কোনো সদস্যদের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক থাকবে না।

ছাত্রলীগ কর্মী আলিফ মাহমুদ রুদ্র বলেন, যদিও আমি আমার বাবার সঙ্গে অনেক দিন ধরে থাকি না। আলাদাভাবে বসবাস করি। তবে আমার বাবা আমাকে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করার কথা বলবে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখে সবাইকে জানিয়ে দিবে, তা সন্তান হিসেবে আমি কামনা করিনি।

তিনি আরও বলেন, ছাত্রলীগকে আমি ভীষণ ভালোবাসি। ছাত্রলীগের রাজনীতি করতে গিয়ে আমি বহুবার হামলার শিকার হয়েছি। মামলা-মোকদ্দমায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে লালন করে বাকি জীবন বেঁচে থাকতে চাই।

কলাপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, ত্যাজ্য বা পরিবার থেকে রুদ্রের সম্পর্ক ছিন্ন করার দুটি দিক থাকতে পারে। একটি হলো, রুদ্রের বাবা বিএনপির রাজনীতি করে, হয়তো এ কারণে ছেলের রাজনীতি তার পছন্দ নয় বিধায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আরেকটি কারণ হলো, রুদ্র ভবিষ্যতে দলে যাতে ভালো পদ পায় সে কারণেও এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার কৌশল হতে পারে।