লাইফস্টাইল

কম বাজেটে দেশের বাইরে কোথায় ঘুরতে যাবেন?

বাংলার কথা বাংলার কথা

প্রকাশিত: ৩:৪৩ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৫, ২০২৩

স্বপ্ন যখন বিদেশ ভ্রমণের, তখন তা পূরণের মূল্যও দুর্গম সীমান্ত অতিক্রমের সমান। আপন দেশ থেকে যতটা দূরে সেই জায়গাটি, ভ্রমণ খরচটাও যেন ঠিক ততটা প্রকাণ্ড হয়ে সামনে আসে। কিন্তু প্রকৃতিপ্রেম বলে কথা; অকৃত্রিম এই আদিম প্রবৃত্তি যেন কিছুতেই ম্লান হবার নয়! অনেকেই খুঁজে বেড়ান, কোথায় সাধ্যের মধ্যে বিদেশ বিভূয়ীয়ের স্বাদ পাওয়া যায়। তাদের জন্যই আজকের ভ্রমণ কড়চা। এখানে একত্রিত করা হয়েছে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের মন্ত্রমুগ্ধ কয়েকটি দর্শনীয় স্থান। আলোচনা করা হয়েছে খুব অল্প বাজেটে কীভাবে এই গন্তব্যগুলোতে বিচরণ করবেন। চলুন বিস্তারিত জেনে নেই- মাত্র ১০ হাজার টাকা বাজেটে দেশের বাইরে কোথায় ঘুরতে যেতে পারেন।

চেরাপুঞ্জি
মহকুমা শহটির স্থানীয় নাম সোহরা, যার অবস্থান ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পূর্ব খাসি পাহাড়ে। এখানকার চেরাপুঞ্জি গ্রাম, সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হওয়া মওসিনরাম, ডাবল ডেকার রুট ব্রিজ, মোসমাই কেভ, মকডক ভিউ পয়েন্ট বহিরাগতদের প্রধান আকর্ষণ। ঝর্ণার মধ্যে মুগ্ধতা ছড়ায় নোহকালীকাই ফলস, থাংখারাং পার্ক, মোসমাই ফলস, কালিকাই ফলস, রেইনবো ফলস, ক্রাংসুরি ঝর্ণা, এবং সেভেন সিস্টার্স ফল্স। সোহরায় যেতে হলে ঢাকা থেকে প্রথমে ট্রেনে করে সিলেট পৌঁছে সেখান থেকে বাসে তামাবিল যেতে হবে। ঢাকা থেকে সিলেট রেলপথে সর্বনিম্ন ভাড়া প্রায় ৪০০ টাকার কাছাকাছি, আর সিলেট থেকে তামাবিলগামী বাসে নিবে ৩৫ টাকা। তামাবিলে ক্রমান্বয়ে বাংলাদেশ অভিবাসন এবং সীমান্ত পেরিয়ে ভারত কাস্টমসে চেকিং শেষ করতে হবে। তারপর সেখান থেকে ট্যাক্সি বা মিনি বাস ডাউকি বাজার দিয়ে নিয়ে যাবে শিলং। শিলংয়ের ওয়ার্ড্সলেকের গেট পার হয়ে কিছুটা সামনে এগোলেই চেরাপুঞ্জি। সোহরা মার্কেটের সোহরা প্লাজার হোটেলগুলো কম খরচে থাকার জন্য বেশ ভালো। এ ছাড়া নৈংরিয়াত গ্রামেও হোম স্টে-র ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এখানে ৪ জনের জন্য রুম ভাড়া পড়তে পারে ১ থেকে দেড় হাজার রুপি, যা প্রায় ১ হাজার ৩৩০ থেকে ২ হাজার বাংলাদেশি টাকার সমান (১ রুপি = ১.৩৩ বাংলাদেশি টাকা)। খাবার খরচ একদিনে জনপ্রতি ১৬০ থেকে ২০০ রুপি (প্রায় ২১৫ থেকে ২৬৬ টাকা) পড়তে পারে।সব মিলিয়ে, প্রায় ৮ থেকে ৯ হাজার টাকায় ৩ দিনের মধ্যে ঢাকা থেকে শিলং দিয়ে চেরাপুঞ্জি ঘুরে আবার ঢাকায় ফিরে আসা যাবে।

দিল্লি
যমুনা নদীর তীরে এই রাজধানী শহরটি একই সঙ্গে ধরে রেখেছে পরিব্রাজকদের জনপ্রিয়তা ও নিজস্ব প্রাচীনতা। দিল্লির জামে মসজিদ, কুতুব মিনার, চাঁদনী চক বাজার, ইন্ডিয়ান গেট, লাল কেল্লা, সম্রাট হুমায়ুনের সমাধি জনবহুল শহরটির সেরা দর্শনীয় স্থান। স্বল্প খরচে দিল্লি দর্শনের জন্য ঢাকাবাসীদের প্রথমে বাসে করে কলকাতায় আসতে হবে। নন এসি কোচে একজনের জন্য খরচ নিবে ৮৯০ থেকে ৯০০ টাকা। এবার কলকাতার হাওড়া গিয়ে সেখানকার রেল স্টেশন থেকে দিল্লির ট্রেনে ধরতে হবে। ননএসি স্লিপারের জন্য খরচ পড়বে প্রায় ৬৫০ থেকে ৭০০ রুপি (প্রায় ৮৬৫ থেকে ৯৩১ টাকা)। দিল্লির মোটামুটি সব দর্শনীয় জায়গাগুলো ঘুরে দেখতে ২দিনই যথেষ্ট। এর জন্যে কোনো ট্যুর এজেন্সির সাইট সিইং প্যাকেজ নেওয়াটা উত্তম। এগুলোতে একজনের জন্য ডে ট্যুরের প্যাকেজ থাকে সাধারণত ৩০০ থেকে ৫০০ রূপির (প্রায় ৩৯৯ থেকে ৬৬৫ টাকা) মতো।এখানে খাবারের জন্য গড় খরচ প্রতিদিন ৩৯০ রুপি (প্রায় ৫১৯ টাকা)। পাহাড়গঞ্জে ৫০০ থেকে ৬৫০ রুপির (প্রায় ৬৫৫ থেকে ৮৬৫ টাকা) মধ্যে ডাবল-বেডের রুম পাওয়া যাবে।

শিমলা
উত্তর ভারতের হিমাচল প্রদেশের রাজধানী এবং বৃহত্তম এই শহর পাহাড়ী ষ্টেশনের রানী হিসেবে পরিচিত। নান্দনিক শহরের ঘুরে দেখার মতো রয়েছে মল রোড, দ্যা রিজ, সামার হিল, ভ্যাইসরিগেল লজ, সেন্ট মাইকেল ক্যাথিড্রাল, হিমাচল স্টেট মিউজিয়াম এবং জাখু। স্বল্প বাজেটে শিমলা ঘুরতে হলে উপরোক্ত উপায়ে ঢাকার যে কোনো স্থান থেকে প্রথমে কলকাতা আসতে হবে। এখানে অভিবাসন প্রক্রিয়া সহ ন্যূনতম ১ হাজার টাকা খরচ হয়ে যাবে। এরপর পূর্বের ন্যায় যেতে হবে কলকাতার হাওড়া স্টেশনে। সেখান থেকে কাল্কা মেইল ট্রেনে উঠে নামতে হবে কাল্কায়, যার জন্য টিকেট মূল্য পড়বে প্রায় ৭১০ রুপি (প্রায় ৯৪৫ টাকা)। কাল্কা থেকে টয় ট্রেনে শিমলা ৫০ রুপি (প্রায় ৬৭ টাকা)। শিমলাতে হোটেল ভাড়া নিতে পারে ১ হাজার রুপি (প্রায় ১ হাজার ৩৩০ টাকা), আর দিনপ্রতি খাবার খরচ হতে পারে একজনের জন্য ১৯৪ রুপি (প্রায় ২৫৮ টাকা)।

মানালি
হিমাচলের কুলু জেলার বিয়াস নদীর উপতক্যার অপূর্ব এক পাহাড়ি শহরের নাম মানালি। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২০৫০ মিটার উপরে শহরটিতে প্রবেশের হাইওয়েটি বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু মোটরওয়ে হিসেবে স্বীকৃত। এখানে দেখার মতো আছে হিড়িম্বা দেবি মন্দির, বন বিহার, রেহালা জলপ্রপাত, গুলাবা, কুল্লু, মান্ডি এবং রোয়েরিক আর্ট গ্যালারি। শিমলার কাছাকাছি হওয়াতে পর্যটকরা এ দু’টো একসঙ্গেই ঘুরে যান। বাসে করে প্রায় ৭০০ রুপিতে (প্রায় ৯৩১ টাকা) শিমলা থেকে মানালি যাওয়া যায়। মানালিতে খাওয়া দাওয়ার জন্য প্রতিদিন ৫০০ রুপি (প্রায় ৬৬৫ টাকা) বাজেট রাখতে হবে। ১ হাজার রুপি (প্রায় ১ হাজার ৩৩০ টাকা) ভাড়ায় দু’জনের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা হয়ে যাবে। এভাবে ২ দিনে ১০ হাজার টাকার মধ্যে মানালির অনেকাংশ ভ্রমণ সম্ভব। তবে এর সঙ্গে শিমলা যোগ করতে হলে বাজেট আরও বেড়ে যাবে।

দার্জিলিং
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের এই মন্ত্রমুগ্ধকর শহরটি ভূ-পৃষ্ট থেকে ৭ হাজার ১০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত। টাইগার হিলের সূর্যোদয় ও কাঞ্চনজঙ্ঘার অনুপম সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্যই মূলত পৃথিবীর নানা প্রান্তের ভ্রমণপিপাসুরা এখানে আসেন। এছাড়া এখানে রয়েছে হিমালায়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইন্সটিটিউট এবং নয়নাভিরাম সব প্যাগোডা ও আশ্রম। দার্জিলিং ভ্রমণের জন্য একই ভাবে ঢাকা থেকে প্রথমে কলকাতামুখী হতে হবে। কলকাতার শিয়ালদহ থেকে দার্জিলিং-এর সর্বনিম্ন ট্রেন ভাড়া ৩৩০ থেকে ৩৬০ রুপি (প্রায় ৪৩৯ থেকে ৪৭৯ টাকা)। শহরে থাকার জন্য ব্যয় করতে হবে ৯০০ থেকে ১ হাজার রুপি (প্রায় ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩৩০ টাকা)। খাওয়া-দাওয়া বাবদ বাজেট রাখতে হবে ৫০০ রুপি (প্রায় ৬৬৫ টাকা)।

আগ্রা
ভারতের অধিকাংশ ল্যান্ডমার্ক বা স্থাপত্য প্রাচুর্য উত্তর প্রদেশের এই শহরটিতে। মোঘল সাম্রাজ্যের এই রাজধানী এখনও পর্যটকদের আকৃষ্ট করে এর ঐতিহাসিক স্থাপত্যের মাধ্যমে। এগুলোর মধ্যে আছে তাজমহল, আগ্রা দুর্গ, ফতেহপুর সিক্রী, আকবরের সমাধি, জাহাঙ্গীর মহল, আঙ্গুরী বাগ, মেহতাব বাগ, এবং ইতিমাদ-উদ-দৌলার সমাধি। খরচ বাঁচিয়ে এখানে আসতে হলে ঢাকাবাসীদের বেনাপোল দিয়ে আসতে হবে। সীমান্তের যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে ৫০ রুপিতে (প্রায় ৬৭ টাকা) শেয়ার করা অটোতে করে যেতে হবে বনগা রেল স্টেশন। তারপর সেখান থেকে ২০ রুপি (প্রায় ২৭ টাকা) দিয়ে কলকাতার শিয়ালদহ। শিয়ালদহ রেল স্টেশন থেকে আগ্রা ফোর্ট যেতে ননএসি স্লিপার ভাড়া ৫৮০ থেকে ৬৩০ রুপি (প্রায় ৭৭২ থেকে ৮৩৮ টাকা)। আগ্রাতে কমের মধ্যে আবাসন মানে ৮০০ থেকে ১ হাজার রুপির (প্রায় ১ হাজার ৬৪ থেকে ১ হাজার ৩৩০ টাকা) হোটেল বা হোমস্টেগুলো। তিনবেলা খাবার জনপ্রতি ৫০০ রুপির (প্রায় ৬৬৫ টাকা) মধ্যেই হয়ে যাবে। সুতরাং সর্বসাকুল্যে ৮ থেকে ৯ হাজার টাকাতেই ২ দিনে দর্শনীয় আগ্রার এক ঝলক দেখে নেওয়া যাবে।

সিকিম
উত্তর-পূর্ব ভারতের এই ক্ষুদ্রতম রাজ্যটির উত্তর ও উত্তর-পূর্বে রয়েছে চীনের তিব্বত, পূর্বে ভুটান, পশ্চিমে নেপালের কোশি এবং দক্ষিণে পশ্চিমবঙ্গ। অধিকাংশ টুরিস্ট স্পট গ্যাংটক, লাচুং ও পেলিং শহরে থাকায় সিকিমের এই জায়গাগুলোতেই বেশি ভীড় হয় প্রকৃতিপ্রেমিদের। সিকিমকে দেখতে হলে ঢাকার যে কোনো স্থান থেকে বাসে করে প্রথমে যেতে হবে পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা। ভাড়া ৬৫০ থেকে ৭৫০ টাকা পড়তে পারে। দুই দেশের অভিবাসন সম্পর্কিত কাজ শেষে অটোতে করে যেতে হবে ফুলবাড়ি বাসস্ট্যান্ড। সেখান থেকে শিলিগুড়ির বাস ভাড়া ১০ রুপি (প্রায় ১৪ টাকা)। এবার সিকিম ভ্রমণের জন্য অনুমতি নেওয়ার পালা এবং তার জন্য যেতে হবে সিকিম জাতীয় পরিবহণ (এসএনটি) অফিসে। শিলিগুড়ির এসএনটি বাস টার্মিনাল থেকে বাস ভাড়া জনপ্রতি ১২০ রুপি (প্রায় ১৬০ টাকা)। দলে বেশি মানুষ থাকলে গাড়ি রিজার্ভ করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে সিকিমের রেজিস্ট্রিকৃত গাড়ি নিলে ভাড়া অনেকটা বাঁচানো যাবে। পর্যটন শহরগুলোর পাশাপাশি এম জি মার্গেও ৫০০ থেকে ১ হাজার রুপির (প্রায় ৬৬৫ থেকে ১ হাজার ৩৩০ টাকা) মধ্যে কক্ষ পাওয়া যায়। আর প্রায় ৫০০ রুপিতে (প্রায় ৬৬৫ টাকা) তিনবেলা আহার হয়ে যায়।

কাশ্মীর
ভারত ভ্রমণে পৃথিবীর বুকে এই স্বর্গ পদচিহ্ন না ফেললে পুরো ভ্রমণটাই অপূর্ণ থেকে যাবে। হিমালয় ও পীর পাঞ্জাল রেঞ্জের মাঝের এই উপত্যকা আগলে রেখেছে পেহেলগাম, গুলমার্গ, সোনোমার্গ আর শ্রীনগরের ডাল লেক বিধৌত মোঘল বাগান ও হজরতবাল মসজিদ। এগুলোর বাইরে দুধপত্রী, কোকরনাগ, সিনথেনটপ, ও ডাকসুম যথার্থ ভাবে ন্যায্যতা দিয়েছে কাশ্মীরের ভূ-স্বর্গ নামের। এই দৃশ্য দু’চোখে ধারণ করতে হলে ঢাকা ছেড়ে পূর্বের ন্যায় বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে বনগাঁও হয়ে পৌছতে হবে শিয়ালদহ স্টেশন। এবার ট্যাক্সি করে ১০০ রুপি (প্রায় ১৩৩ টাকা) ভাড়ায় যাত্রা করতে হবে কলকাতা নিউমার্কেটের উদ্দেশ্যে। সেখানে মারকুয়েস্টিক এলাকায় ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর কাছে পাওয়া যাবে জম্মুগামী ট্রেনের টিকেট। ননএসি স্লিপারের মূল্য প্রায় ৯০০ রুপি (প্রায় ১২০০ টাকা)। জম্মুতে ট্রেন থেকে নেমে উঠতে হবে শ্রীনগরের বাসে, যেখানে ভাড়া পড়বে সর্বোচ্চ ৮০০ রুপি (প্রায় ১ হাজার ৬৪ টাকা)। শ্রীনগরে থাকার জন্য ডাল গেট এলাকার হোটেলগুলোই সবচেয়ে সুবিধাজনক। সেখানে দুই বেডের কক্ষের ভাড়া মৌসুমভেদে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ রুপি (প্রায় ১ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার টাকা) পর্যন্ত। এই পুরো যাত্রায় অন্তত ৯ থেকে ১০ দিন সময় নেওয়া জরুরি, কেননা ৪ থেকে ৫ দিন পথেই চলে যাবে।

জয়পুর
রাজস্থানের রাজধানী ও বৃহত্তম এই শহরের পুরনো অংশ পিংক সিটি নামে অধিক পরিচিত। এখানে আছে প্রাচীন অ্যাম্বার দুর্গ, বৃহত্তম পাথুরে মান মন্দির জন্তর মন্তর, সেন্ট্রাল মিউজিয়াম, ও হাওয়া মহল। জয়পুর ভ্রমণ করতে হলে ঢাকা থেকে কলকাতার শিয়ালদহ অথবা হাওড়ায় পৌছতে হবে। অভিবাসনের আনুষঙ্গিক কাজ সহ সব মিলিয়ে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা লেগে যেতে পারে। হাওড়া থেকে জয়পুর স্টেশন নন এসি স্লিপার ভাড়া ৬৫৫ রুপি (প্রায় ৮৭১ টাকা)। আবাসনের জন্য বাজেট রাখতে হবে ৮০০ থেকে ১ হাজার রুপি (প্রায় ১ হাজার ৬৪ থেকে ১ হাজার ৩৩০ টাকা)। খাবারে ব্যয় হতে পারে জনপ্রতি প্রায় ২০০ রুপি (প্রায় ২৬৬ টাকা)। এভাবে ৯ হাজার টাকার মধ্যে ৩ থেকে ৪ দিন কাটানো যেতে পারে জয়পুরে।

উদয়পুর
গুজরাট সীমান্তের কাছাকাছি রাজস্থানের সর্ব দক্ষিণের এই শহরটি ‘হৃদের নগরী’ নামে পরিচিত। ঘোরাঘুরি শুরু করা যেতে পারে পিছোলা লেকের পাড়ে ‘উদয়পুর সিটি প্যালেস’ দিয়ে। এরপর একে একে যাওয়া যেতে পারে গংগৌর ঘাট, ফতেহ সাগর লেক, একলিংজি মন্দির, জগদীশ মন্দির, এবং দুধ তালাই সঙ্গীত বাগান। জয়পুরের মতো এখানেও একই ভাবে ঢাকা থেকে কলকাতার শিয়ালদহ অথবা হাওড়ায় আসতে হবে। হাওড়া জংশন থেকে উদয়পুরগামী ট্রেনের সর্বনিম্ন টিকেট মূল্য ৫৮৫ রুপি (প্রায় ৭৭৮ টাকা)। উদয়পুরে থাকতে হলে খরচ করতে হবে গড়পড়তায় ৫৩৪ রুপি (প্রায় ৭১১ টাকা)। খাবারের জন্য ব্যয় হয়ে পারে মাথাপিছু ৩৫৮ রুপি (প্রায় ৪৭৭ টাকা)। পর্যটকরা রাজস্থান ঘোরার সময় জয়পুর ও উদয়পুরের কোনোওটাকেই ছেড়ে আসেন না। কিন্তু বাজেট যেহেতু ১০ হাজার, সেখানে একসঙ্গে দুটো জায়গা ভ্রমণ তালিকায় রাখা সম্ভব হবে না।

ভিসা ও অভিবাসন খরচ
ভারতে ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য প্রথমেই লাগবে কমপক্ষে ৬ মাস মেয়াদি পাসপোর্ট। পাসপোর্টে নিদেনপক্ষে ২টি সাদা পৃষ্ঠা থাকতে হবে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে অনলাইনে ভারতীয় ভিসার জন্য আবেদন করা যাবে। এ সময় আগের সব পাসপোর্ট (যদি থাকে) জমা দিতে হবে। ভ্রমণের জন্য আবেদনকারীর অবশ্যই ১৫০ মার্কিন ডলার (১ মার্কিন ডলার = ১১০.৮১ টাকা রেট অনুযায়ী প্রায় ১৬ হাজার ৬২২ টাকা) থাকতে হবে। এ জন্য তার সমমানের বৈদেশিক মুদ্রার এনডোর্সমেন্ট করা আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড থাকতে হবে। এছাড়া পরিপূরক হিসেবে বিগত ৩ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্টের অনুলিপি দিতে হবে। ভিসা প্রক্রিয়াকরণের জন্য ফি দিতে হবে ৮০০ টাকা। ভ্রমণকালো ভারতীয় অভিবাসন পয়েন্টগুলোতে ভ্রমণ ট্যাক্স ৫০০ টাকা এবং ল্যান্ডপোর্ট ট্যাক্স ৫০ টাকা প্রদান করতে হবে।

বলাই বাহুল্য, ১০ হাজার টাকা বাজেটে দেশের বাইরে এই ১০টি জায়গার অধিকাংশগুলোরই অনেক কিছু বাকি রেখে ফিরতে হবে। তন্মধ্যে ভিন্ন ধরনের স্থাপনা থাকলেও ঢাকার জনাকীর্ণতা ও শহুরে ভাবের পুনরাবৃত্তি মিলবে দিল্লি ও আগ্রাতে। অবশ্য একই রকম জনবহুলতা থাকলেও জয়পুর ও উদয়পুর পুরো রাজস্থানকে ঘুরে দেখার আশা জাগাবে। কিন্তু চেরাপুঞ্জি, শিমলা, মানালি, দার্জিলিং, সিকিম ও কাশ্মীর থেকে ফেরার পথে শুধু একটা কথাই মনে বাজবে। আর তা হলো- কষ্ট করে আরও ক’টা দিন থেকে গেলে ভালো হতো!