জাতীয়

শপথ নিলেন নতুন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন

বাংলার কথা ২৪ বাংলার কথা

প্রকাশিত: ২:৪৬ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৪, ২০২৩

বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিয়েছেন মো. সাহাবুদ্দিন। শপথ গ্রহণের পরপরই দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি।

সোমবার (২৪ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে বঙ্গভবনের ঐতিহাসিক দরবার হলে শপথ গ্রহণ করেন নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি।

নতুন রাষ্ট্রপতিকে শপথ বাক্য পাঠ করান জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

শপথ গ্রহণ মঞ্চে নতুন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং জাতীয় সংসদের স্পিকারের মাঝে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

শপথ গ্রহণের পরই নতুন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে চেয়ার ছেড়ে দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। আনুষ্ঠানিকভাবে চেয়ার বদল করেন তারা। এরপর নতুন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শপথ নথিতে স্বাক্ষর করেন।

গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ৭৩ বছর বয়সী মো. সাহাবুদ্দিন বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হন।

শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান শুরুর আগে নতুন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বঙ্গভবনে পৌঁছালে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তাকে স্বাগত জানান।

সকাল ১০টা ৫৪ মিনিটে রাষ্ট্রপতির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান শুরু হয়। শুরুতে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। এরপর পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করা হয়। বেলা ১১টায় শপথ গ্রহণ করেন নতুন রাষ্ট্রপতি।

নতুন রাষ্ট্রপতির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা, প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী মন্ত্রিপরিষদ সদস্যসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।

নতুন রাষ্ট্রপতির স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা ও ছেলে আরশাদ আদনান রনিসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, কূটনীতিক, সিনিয়র সাংবাদিক এবং পদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা।

শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।

মো. সাহাবুদ্দিন ১৯৪৯ সালের ১০ ডিসেম্বর পাবনা শহরের শিবরামপুরের জুবিলী ট্যাংক পাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাক নাম চুপ্পু। পিতা শরফুদ্দিন আনছারী, মাতা খায়রুন্নেসা।

মো. সাহাবুদ্দিন ১৯৭৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন এবং পরে এলএলবি ও বিসিএস (বিচার) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

রাজনৈতিক জীবনে পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, পাবনা জেলা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সভাপতি ছিলেন। জেলা বাকশালের যুগ্ম-সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

সাবেক এই ছাত্রনেতা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

সাহাবুদ্দিন ছেষট্টির ৬ দফা আন্দোলন, উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচন এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।

তিনি পাবনা জেলার আন্দোলন-সংগ্রামে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করেন। ওই সময় সামরিক স্বৈরশাসকদের রোষানলে তিন বছর জেল খাটেন এবং নির্যাতনের শিকার হন।

মো. সাহাবুদ্দিন দৈনিক বাংলার বাণীতে সাংবাদিকতাও করেছেন। তাঁর অনেক কলাম বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে ছাপা হয়েছে।

কর্মজীবনে তিনি জেলা ও দায়রা জজ এবং দুদকের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক এবং বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে নিযুক্ত সমন্বয়কারী হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন।

সাহাবুদ্দিন পরপর দুবার বিসিএস (বিচার) অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব নির্বাচিত হন। চাকরি থেকে অবসরের পর হাইকোর্টে আইন পেশায় নিযুক্ত হন।

পরবর্তী সময়ে ২০০১ সালের নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতা তদন্তে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দুদক কমিশনার হিসেবে সাহাবুদ্দিন পদ্মা সেতু প্রকল্পের বিরুদ্ধে ওঠা তথাকথিত দুর্নীতির ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় দৃঢ়তার পরিচয় দেন।

আবদুল হামিদ সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের মৃত্যুর পর ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে ৪১ দিনসহ টানা দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতি হিসেবে ১০ বছর ৪১ দিন রাষ্ট্রপতির চেয়ারে ছিলেন।