১১ নভেম্বর, ২০২৫

দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনে মানসিকতার পরিবর্তন আনতে হবে: দুদক কমিশনার

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কমিশনার (তদন্ত) মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী বলেছেন, দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনে আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন আনতে হবে। দুর্নীতি দমন শুরু করতে হবে নিজ ঘর থেকে। ব্যক্তিগত লোভ ও লালসা পরিহার করতে হবে, অন্যের অধিকার হরণ করা যাবে না।

সোমবার (১০ নভেম্বর) দিনাজপুর শিশু একাডেমি মিলনায়তনে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে তারুণ্যের একতা গড়বে, আগামীর শুদ্ধতা’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আয়োজিত গণশুনানিতে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। গণশুনানিতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন, দুদক রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মো. নুরুল হুদা এবং জেলা পুলিশ সুপার মো. মারুফাত হুসাইন।

দুদক কমিশনার বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের মনে রাখতে হবে, জনগণের ট্যাক্সের টাকায় তাদের বেতন হয়। তাই জনগণের সেবা করাই তাদের প্রধান দায়িত্ব। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ঘুষ, দুর্নীতি বা অবৈধভাবে অর্থ-সম্পদ অর্জনের অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, নিজ নিজ দপ্তর দুর্নীতিমুক্ত রাখতে হবে। জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে হবে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে।

শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নৈতিক শিক্ষা ও শুদ্ধাচার চর্চায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে। সপ্তাহে অন্তত একদিন শিক্ষার্থীদের ভালো-মন্দের পার্থক্য শেখাতে হবে, সৎ ও ন্যায়ের পথে চলতে উৎসাহ দিতে হবে।’ গণশুনানির মূল লক্ষ্য হলো স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে জনগণের সরকারি সেবা প্রাপ্তি সহজ করা। কোনো কর্মকর্তা যেন রাজনৈতিক প্রভাব বা বাহ্যিক চাপে পড়ে দুর্নীতির পথে না হাঁটে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. রফিকুল ইসলাম। বক্তব্য রাখেন জেলা দুদক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. আতাউর রহমান। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. রিয়াজ উদ্দিন, দুদকের সহকারী পরিচালক মো. ইসমাইল হোসেন ও মো. নুর আলম, জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

গণশুনানিতে সরকারি ও বেসরকারি ১২৭টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মোট ১৭৯টি অভিযোগ জমা পড়ে। এর মধ্যে শতাধিক অভিযোগের শুনানি সম্পন্ন হয় এবং বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগের নিষ্পত্তি করা হয়। এছাড়া কিছু অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য দুদক জেলা কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।