২৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

জাতীয়
হাদি হত্যাকাণ্ড

প্রধান আসামি ফয়সাল ও তাঁর সহযোগী ভারতে পালিয়েছে : ডিএমপি

প্রধান আসামি ফয়সাল ও তাঁর সহযোগী ভারতে পালিয়েছে : ডিএমপি

শরিফ ওসমান হাদি হত্যা মামলার  প্রধান আসামি ও তাঁর সহযোগী ভারতে পালিয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। তাদের পালাতে সহযোগিতা করেছে ভারতের দুই নাগরিক। মেঘালয় পুলিশ ওই দুই ভারতীয় নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে।

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শহীদ হাদি হত্যার দুই আসামি  ফয়সাল করিম মাসুদ ও তাঁর সহযোগী আলমগীর শেখকে ভারতে পালাতে সহযোগিতার অভিযোগে গ্রেপ্তার দুজনের নাম জানিয়েছে ডিএমপি। তাঁরা হলেন, পূর্তি ও সামী।

আজ রোববার  ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার  এস এন নজরুল ইসলাম এসব কথা জানান।

সংবাদ সম্মেলনে নজরুল ইসলাম বলেন, হাদির হত্যাকাণ্ডটি পূর্বপরিকল্পিত। ঘটনার পর ফয়সাল ও আলমগীর  ঢাকা থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় আমিনবাজারে যান। সেখান থেকে গাড়িতে করে  কালামপুরে যান।  কালামপুর থেকে আরেকটি গাড়িতে করে  ময়মনসিংহ সীমান্তে যান। সেখানে ফয়সাল ও আলমগীরকে নেন ফিলিপ পাল ও সঞ্জয় । তারা সীমান্তে অবৈধভাবে মানুষ পারাপার করেন। পরে ফিলিপ দুজনকে ভারতের মেঘালয় রাজ্যে নিয়ে যান।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার আরও বলেন,  ফয়সাল ও আলমগীরকে  ভারতের তুরা নামক স্থানে নিয়ে যান ফিলিপ। সেখানে ভারতীয়  নাগরিক পূর্তির  কাছে তিনি দুজনকে পৌঁছে দেন। পরে সামী নামের এক ব্যক্তির গাড়িতে করে সেখান থেকে পালিয়ে যান তাঁরা।

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, হাদি হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।  তাঁদের মধ্যে ৬ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।  এ ছাড়া চারজন সাক্ষীও আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।

হাদি হত্যা মামলাটির তদন্ত একেবারে শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানায় ডিএমপি। আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে এই মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হবে বলে ডিএমপি জানায়।

সংবাদ সম্মেলনে  মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের অনেককেই শনাক্ত করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে সবার নাম বলা যাচ্ছে না। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যে এটাকে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডই মনে হচ্ছে।

শহীদ ওসমান হাদি ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ছিলেন। ১২ ডিসেম্বর জুমার নামাজের কিছু পর রাজধানীর পুরানা পল্টনের কালভার্ট রোডে রিকশায় থাকা হাদিকে গুলি করা হয়। তাঁকে মাথায় গুলি করার পর আততায়ীরা মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে ১৮ ডিসেম্বর মারা যান তিনি।

গত রোববার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে লাখ লাখ মানুষের অংশগ্রহণে তাঁর জানাজা হয়। তাঁকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ-সংলগ্ন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধিস্থলের পাশে দাফন করা হয়।

এদিকে হাদির খুনিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে আজ রোববার বেলা দুইটা থেকে সারা দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে সর্বাত্মক অবরোধ পালনের ঘোষণা দিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ।

গতকাল শনিবার রাত পৌনে একটার দিকে ইনকিলাব মঞ্চের এক ফেসবুক পোস্টে এ কথা জানানো হয়। এর আগে রাত সাড়ে ১১টার দিকে শাহবাগের অবস্থান কর্মসূচি থেকে ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল জাবের বেলা ১১টায় কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে আজ ডিএমপির সংবাদ সম্মেলন থাকায় সেটি পর্যালোচনার পর বেলা দুইটা থেকে পরিবর্তিত কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।

Home R3