অনলাইন ডেস্ক:
খাওয়ার সময় তাড়াহুড়োয় অনেকের গলায় খাবার আটকে যায়। অনেক ক্ষেত্রে গলায় খাবার আটকে মানুষের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে।
ভারতীয় বায়ুসেনার প্রথম বাঙালি এয়ারমার্শাল সুব্রত মুখোপাধ্যায় ১৯৬০ সালে জাপানের টোকিওর এক রেস্টুরেন্টে খাওয়ার সময় গলায় খাবার আটকে মারা যান। এ ছাড়া সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ গলায় খাবার আটকে প্রায় মৃত্যুর মুখে পৌঁছে গিয়েছিলেন। এমন অনেক ঘটনাই রয়েছে।
এতে একজন মানুষের অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে ওঠে। যাকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় এনেক্সিয়া। খাওয়ার সময় গলায় খাবার আটকে যাওয়ার বিষয়টিকে হেলাফেলায় নেওয়া উচিত নয়। মৃত্যুর দুয়ার থেকে কাউকে বাঁচাতে আপনিও কিছু বিষয় জেনে তাৎক্ষণিকভাবে সাহায্য করতে পারেন।
খাবার হোক বা অন্য কিছু কারও শ্বাসনালীতে আটকে গেলে প্রথমেই তার নিঃশ্বাসের কষ্ট হবে। কাশি, বুকের মধ্যে হাওয়ার শব্দ, বমি বমি ভাব, কথা বলতে না পারা, ঠোঁট নীল ও জ্ঞান হারানোর মতো সমস্যা হতে পারে। ৭ থেকে ১২ মিনিটের মধ্যে চিকিৎসা শুরু না করলে রোগীকে বাঁচিয়ে তোলা মুশকিল হবে।
মার্কিন থোরাসিক সার্জন হেনরি জে হেইমলিচ ১৯৭৪ সালে গলায় খাবার আটকে গেলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সম্পর্কে একটি উপায় জানিয়েছেন। যে চিকিৎসা পদ্ধতির সাহায্যে মানুষকে মৃত্যুর দুয়ার থেকে রক্ষা করা যায়। ওই পদ্ধতিটির নাম হলো হেইমলিচ ম্যানিউভার।
খাবার আটকে গেলে পিঠে চাপড় মারলে তেমন কোনো কাজ হয় না। এর চেয়ে হেইমলিচ ম্যানিউভার পদ্ধতিতে রোগীকে বিপদ থেকে বাঁচানো সম্ভব। এজন্য রোগীকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরুন। তার পেট ও পাঁজরের সংযোগস্থলে দুহাতে ধরে সজোরে ধাক্কা দিন। এতে আটকানো খাবার মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসবে। এভাবে অনেকের প্রাণ বাঁচানো যায়।
শ্বাসনালীতে খাবার আটকে গেলে অক্সিজেন চলাচল কমে যায়। একসময় পুরোপুরি বন্ধও হয়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রে দ্রুত আটকে যাওয়া খাবারের টুকরো বের না করলে রোগীকে বাঁচানো যায় না। কোনো মানুষকে এমন পরিস্থিতিতে পড়তে দেখলে হেইমলিচ ম্যানেউভারের সাহায্যে তাকে সুস্থ করে তোলা যায়।
মনে রাখবেন, এক বছরের শিশু বা গর্ভবতী নারীর ওপর কখনোই হেইমলিচ ম্যানিউভার পদ্ধতি ব্যবহার করা যাবে না। প্রয়োজনে দ্রুত তাদের হাসপাতালে নিতে হবে।
বাংলার কথা/শাকিল আহমেদ